প্রকাশিত: Thu, Jan 19, 2023 3:47 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 9:59 AM

মরণোত্তর কিডনি দানকারী সারা ইসলাম প্রখ্যাত সাংবাদিক সানাউল্লাহ নূরীর নাতনি

দেশে এই প্রথম মৃত মানুষের কিডনি দুজনের দেহে সফল প্রতিস্থাপন

মাজহারুল ইসলাম: সারা ইসলাম গত বুধবার মাত্র ২০ বছর বয়সে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে মারা যান। তার মা শবনম সুলতানা দীনা জানান, সারা দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কে টিউমারসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি তার দেহের সবকিছুই দান করে দিতে বলেছেন। তার মৃত্যুর পর কিডনি ও কর্নিয়া নেওয়া হয়েছে। মরণোত্তর কিডনি দানে উদ্বুদ্ধ করতে সারার এই দান মানুষের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে।

বুধবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোররাত ৪টা পর্যন্ত দুটি কিডনির একটি প্রতিস্থাপন করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ), অন্যটি প্রতিস্থাপন করা হয় কিডনি ফাউন্ডেশনে। এর আগে সারা ইসলামের কফিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন বিএসএমএমইউ’র ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ। 

প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপনে অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বিএসএমএমইউর রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, সারা তিন দিন আগে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বিএসএমএমইউতে ভর্তি হন। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁকে ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করা হয়। তার কিডনির সঙ্গে ম্যাচ করতে কয়েকজন কিডনি রোগীর তথ্য মেলানো হয়। এর মধ্যে ৩৪ ও ৩৭ বছর বয়সী দুই নারীর সঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মিলে যায়। আত্মীয় না হওয়ায় এর বেশি মেলেনি। বাকিটা ওষুধ প্রয়োগে উপযোগী করা হয়েছে।

বিএসএমএমইউতে কিডনি প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার দলে আরো ছিলেন হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক তৌহিদ মো. সাইফুল হোসাইন, সহযোগী অধ্যাপক ফারুক হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক কার্তিক চন্দ্র ঘোষসহ ১৫ চিকিৎসক। তারা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দাতার কাছ থেকে কিডনি নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। অস্ত্রোপচারে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। এরপর কিডনিটিকে প্রতিস্থাপনযোগ্য করতে আধা ঘণ্টা লাগে। কিডনি প্রতিস্থাপনে সময় লাগে আরো দুই ঘণ্টা।

সারাবিশে^ই ক্লিনিক্যালি ডেথ বা ব্রেইন ডেথ রোগীদের থেকে সাধারণত কিডনি নেওয়া হয়ে থাকে। ১৯৫৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে, এরপর যুক্তরাজ্য থেকে শুরু করে পাশের দেশ ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ব্রেইন ডেথ রোগীদের থেকে কিডনি নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হলেও বাংলাদেশে আগে কখনো তা করা হয়নি। নতুন এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে অনেক কিডনি রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব